পৃথিবীর ভর এবং তার মহাকর্ষ/অভিকর্ষ বল।

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ 


পৃথিবীর ভর এবং তার মহাকর্ষ/অভিকর্ষ বল। (পবিত্র কুরআন কি বলে?)




মহান আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে বলেন , خَلَقَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا
তিনি খুঁটি ব্যতীত আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছেন (লোকমান ৩১:১০)।

আবার অন্য আয়াতে বলেন , اللّهُ الَّذِي رَفَعَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا 
আল্লাহ, যিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত। তোমরা সেগুলো দেখ (রা’দ ১৩:০২)।

মহাকাশের তারাগুলো খুঁটি ছাড়াই অবস্থান করছে

তার মানে মহান আল্লাহ্ বুঝাতে চেয়েছেন যে, আকাশমন্ডলীর বিভিন্ন বস্তু সমূহ কোন পিলার বা স্তম্ভ নেই কিন্তু কোন এক অদৃশ্য শক্তির বলে তারা ঘুরপাক খাচ্ছে !

মহাকাশের আমাদের সোলার সিস্টেম । যার মধ্যে শূন্যস্থানে বিভিন্ন গ্রহ ঘুরছে অথছ তাদের মধ্যে কোন পিলার নেই ।

তাহলে তাদের মধ্যে কোন শক্তি কাজ করছে যার ফলে তারা শূন্যের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে ? পবিত্র কুরআন বুঝতে হলে অনেক ক্ষেত্রে অনুধাবনের প্রযোজন হয় । আসুন একটু বুঝার চেষ্টা করি ।

মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকনা একে অপরকে আকর্ষন করে আর এ আকর্ষন বলের নাম মহাকর্ষ বল ।

 আর এর উপর বিখ্যাত সূত্রটি দিয়েছিলেন  ১৬৮৭ সালে স্যার আইজাক নিউটন । তিনি বলেছিলেন , "এই মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকণা একে অপরকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে এবং এই আকর্ষণ বলের মান বস্তু কণাদ্বয়ের ভরের গুণ ফলের সমানুপাতিক, এদের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যাস্তানুপাতিক এবং এই বল বস্তুদ্বয়ের কেন্দ্র সংযোজক সরলরেখা বরাবর ক্রিয়া করে।"

তাহলে মহাবিশ্বের ক্ষেত্রে আমরা গানিতিক আকারে লিখতে পারি ,

মহাকর্ষীয় বল  ;


 যেখানে m1 m2 হচ্ছে ১ম ও ২য় বস্তুর ভর আর r হচ্ছে বস্তু দুটি মধ্যকার দূরত্ব  যেখানে G মহাকর্ষীয় ধ্রুবক ।
এখানে যথাক্রমে G ও r ধ্রুবক হলে আমরা লিখতে পারি ,
 
অর্থাৎ আমরা বলতে পারি মহাকর্ষ বল বস্তুদ্বয়ের ভরের গুনফলের সমানুপাতিক ।

আবার পৃথিবীর ক্ষেত্রে পৃথিবী ও অন্য বস্তুর আকর্ষন বলকে বলে অভিকর্ষ বল । যেমন পৃথিবী ও পৃথিবীর উপর কোন বস্তুকনা (পাথর ,ইট ,মানুষ ইত্যাদি) । কিন্তু পৃথিবীর বাহিরে বস্তু অবস্থিত হলে তাদের মধ্যকার সেই বলকে বলে মহাকর্ষ । যেমন পৃথিবী ও চাঁদ কিংবা সূর্য ও পৃথিবীর আকর্ষন বল ।

পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের ক্ষেত্রে সূত্রমতে পাই ,
অভিকর্ষ বল ;
  

যেখানে M ও m হচ্ছে যথাক্রমে পৃথিবীর ভর ও পৃথিবীর উপর অন্যকোন বস্তু ভর এবং R হচ্ছে পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে বস্তুর দূরত্ব। যেখানে G মহাকর্ষীয় ধ্রুবক । 

যদি G ও R ধ্রুবক হয় তাহলে লিখতে পারি ,
F ∝ Mm অর্থাৎ পৃথিবীর মহাকর্ষ বল বস্তুদ্বয়ের ভরের গুনফলের সমানুপাতিক ।
তাহলে বুঝাগেল মহাকর্ষ বা অভিকর্ষের রহস্য হলো ভস্তুর ভর ।অর্থাৎ ভর বেশী হলে আকর্ষন বল বেশী হবে আবার ভর কম হলে আকর্ষন বল কম হবে ।

তাহলে দেখি মহাকর্ষ বা অভিকর্ষ বল সম্পর্কে মহান আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে কি বলেছেন ; 
যেহেতু কিয়ামতের সময় সব সব কিছু বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে মহাবিশ্বের সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে । আর এর জন্য প্রথমে চাই মহাকর্ষ / অভিকর্ষ বলের ভারসাম্যহীনতা । আবার মহাকর্ষ / অভিকর্ষ বলের ভারসাম্যহীনতার জন্য চাই বস্তুর  ভরের ভারসাম্যহীনতা । 

আর কিয়মতের পূর্ব আলামাতকে ইঙ্গিত করে মহান আল্লাহ্ বলেন ,

এবং পৃথিবী তার আপন বোঝা (ভর) সমূহ বের করে দিবে (যিলযাল ৯৯:০২) ।


তাহলে পবিত্র কুরআন বলছে ভরই হচ্ছে মহাকের্ষর শক্তির উৎস যা ফলে তিনি খুঁটি ব্যতীত আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছেন (লোকমান ৩১:১০)। এবং যিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত। তোমরা সেগুলো দেখ (রা’দ ১৩:০২)।


মন্তব্য : ভর সমূহই মহাকর্ষ শক্তির জন্য দায়ী আর মহান আল্লাহ্ কিয়ামতের সময় তা ধ্বংস করে দিবেন ।






(অতি সংক্ষিপ্ত)

মোহাম্মদ মুদ্দাচ্ছির ইসলাম
এনভায়রনমেন্টাল সাইন্স
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ।

Comments

Post a Comment

মন্তব্যঃ

Popular posts from this blog

সমুদ্রের কোন কোন প্রাণী খেতে পারবেন ?

পৃথিবী গোলাকার না ডিম্বাকার!

নূহ আ:এর নৌকা ও বিশ্ব স্বীকৃতি ।