প্রাণীর মধ্যে সামাজিকতা !

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ 

প্রাণীর মধ্যে সামাজিকতা (পবিত্র কুরআন এর সাক্ষ্য?)



প্রথমেই বলে রাখি নবী মুহাম্মদ সাঃ বাস করতেন আরবের মরুভূমিতে । আর সেখানে ছিল শুধু মরুভূমি ফলে সেখানে না ছিল কোন সমৃদ্ধ প্রাণী বৈচিত্র না পাখির আবাস । কিন্তু তা সত্বেও মহান আল্লাহ্ প্রাণীর বৈশিষ্ট্য নিয়ে প্রায় ১৪৫০ বছর আগে নবী মুহাম্মদ সাঃ কে জানিয়ে দিয়েছিলেন ।

বর্তমানে আধুনিক বিজ্ঞানের আবিষ্কার যেমন উন্নত ক্যামেরা , জিপিএস প্রযুক্তি , প্রাণী ট্র্যাকিং সিস্টেম ইত্যাদির কারণে প্রাণী বিজ্ঞানের জ্ঞান আরো উন্নত হয়েছে । এতে আরো নতুন নতুন গবেষনার মাধ্যমে প্রাণীদের গভীর বৈচিত্র জানা সম্ভব হয়েছে ।

তার ফলে আবিষ্কৃত হয়েছে যে , মানুষের মতো দলবদ্ধ সামাজিক জীবনযাপন প্রাণীর মধ্যেই দেখা যায়। এই সামাজিকতা ক্ষুদ্র প্রাণী পিঁপড়া থেকে শুরু করে জলজ , স্থলজ , আকাশের প্রাণীদের মধ্যেও বিদ্যমান।

এ ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ্ বলেন ;
আর যত প্রকার প্রাণী পৃথিবীতে বিচরণশীল রয়েছে এবং যত প্রকার পাখী দু ডানাযোগে উড়ে বেড়ায় তারা সবাই তোমাদের মতই একেকটি শ্রেণী। আমি কোন কিছু লিখতে ছাড়িনি। অতঃপর সবাই স্বীয় প্রতিপালকের কাছে সমবেত হবে। (০৬:৩৮)

এ আয়াতের ব্যাখ্যা বলতে চাইলে প্রথমে ;  

কীটপতঙ্গের কথা বললে আমরা দেখতে পাই পিঁপড়া, উঁইপোকা, মৌমাছি প্রভৃতি প্রাণীর মধ্যে সুশৃংখল সামাজিক বন্ধন দেখা যায়।এদের মধ্যে রয়েছে দলপতি রাজা ও রানী এবং সেই সঙ্গে অসংখ্য কর্মী সদস্য। আবার  কর্মীদের মধ্যে দেখা যায় শ্রমবিভাগ, কেউ খাদ্য সংগ্রহ করে, কেউ প্রতিরক্ষায় অংশগ্রহণ করে, আবার কেউবা ডিম ও লার্ভার পরিচর্যা করে। রাজা ও রানী শুধু প্রজননে অংশগ্রহণ করে থাকে। আবার তারা খাবার সঞ্চয় করে অনাগত দিনের জন্য।

বুনো স্থলচর প্রাণীদের মধ্যে প্রায় সবাই দলবদ্ধ ভাবে বসবাস করে যেমন গন্ডার , হাতি ,শিয়াল ,সিংহ ,বাঘ , হরিন ,বানর , মহিষ ইত্যাদি । উদ্দেশ্য হচ্ছে শত্রুর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা বা শিকার করার সময় যথা সম্ভব দূর্ঘটনা এড়ানো ।

জলজ প্রাণীর মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, তিমি, ডলফিন ইত্যাদি প্রাণী দলবদ্ধভাবে বসবাস করে। কয়েক প্রজাতির মাছ সাধারণত ঝাঁকবেঁধে চলাচল করলেও তাদের মধ্যে কোনো সামাজিক বন্ধন নেই বা খুব কম । তবে ডলফিন ও তিমির মধ্যে এক সুন্দর সামাজিক বন্ধন রয়েছে । যেমন শব্দের প্রতিধ্বনি ব্যবহার করে তারা দলের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে বিশেষ করে তিমি এ যোগাযোগের মাধ্যমে এক মেরু থেকে অন্য মেরুতে সাগর দিয়ে তাদের বাচ্চাদের নিয়ে আনোয়াসে চলাচল করে থাকে ।



পাখিদের মধ্যেও রয়েছে দলবদ্ধ হয়ে বসবাসের প্রবণতা। বক, পানকৌড়ি, শামুখখোল পাখিরা বড় গাছে একসঙ্গে বাস করে। এ সব দলে একসঙ্গে কয়েকশ থেকে কয়েক হাজার সদস্যের দেখা মেলে। আবার পরিযায়ী পাখি পরিযায়নের সময় নতুন জায়গার উদ্দেশে দলবেঁধে পাড়ি জমায় যাতে তাদের মধ্যে কেউ হারিয়ে না যায় কিংবা পথে বসে থাকা অন্য বড় শিকারী (যেমন , সামুদ্রিক বাজ পাখি ) সহজে আক্রমন না করতে পারে ।

তাহলে দেখা গেল প্রাণী জগৎ ও বেঁচে থাকার জন্য তারা মানুষের  মত্য দলবদ্ধ কিংবা শ্রেণীবিন্যাস হয়ে কাজ করে থাকে !!




(অতি সংক্ষিপ্ত)

মোহাম্মদ মুদ্দাচ্ছির ইসলাম
এনভায়রনমেন্টাল সাইন্স
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ।

Comments

Post a Comment

মন্তব্যঃ

Popular posts from this blog

সমুদ্রের কোন কোন প্রাণী খেতে পারবেন ?

পৃথিবী গোলাকার না ডিম্বাকার!

নূহ আ:এর নৌকা ও বিশ্ব স্বীকৃতি ।