পূর্বে মহাকাশের অবস্থা কেমন ছিল ?

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ 
পূর্বে মহাকাশের অবস্থা কেমন  ছিল (পবিত্র কুরআন কি বলে?)


যদি প্রশ্ন করা হয় যে মহাবিশ্বের বয়স কত ? 
তাহলে অনেকটা আজগুবী বলে মনে হবে মনে হবে তাই না ! কারন তখন তো কেই ছিল না তাহলে কিভাবে তা পরিমাপ করা সম্ভব ? 
মহাবিশ্বের বয়সের ব্যাপারে সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য তথ্য হচ্ছে ১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন বছর বা প্রায় ১৪০০ কোটি বছর। কিন্তু কিভাবে মাপা হল এই বয়স ? 

যদি একেবারে সাধারন ভাবে ব্যাখ্যা দেই তাহলে বিজ্ঞানী হাবলের বিশ্লেষণ মতে ;  ছায়াপথ সমূহে (Galaxy) সমূহ একে অপর থেকে সমহারে দূরে সরে যাচ্ছে তাহলে আমরা বলতেই পারি অতীতের কোন এক সময় এরা সবাই যুক্ত ছিল। বর্তমানে গ্যালাক্সিদের বেগ, পারস্পরিক দূরত্ব ও এর সাথে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণেকে কাজে লাগিয়ে আমরা বলতে পারি তারা কত সময় পূর্বে একত্রে ছিল বা সৃষ্টির আদি উৎস। আর এই সময়টাই হচ্ছে মহাবিশ্বের বয়স । আর এভাবে উত্তরটা পাওয়া গেছে প্রায় ১৪ বিলিয়ন বছর  বিস্তারিত পরে আসছি 

মহাবিশ্বের যে ছায়াপথে বসবাস করি তার নাম মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথ । এরকরম ছায়াপথ সমূহের (Galaxy) সংখ্যা প্রায় ২০,০০০ কোটি ! তবে বিজ্ঞানীরা বলছে এর সংখ্যা আরো অনেক বেশী  হবে। এবার আমাদের আকাশগঙ্গার কথা বললে সেখানেও আছে বিলিয়ন সংখ্যক তারা তার মধ্যে সূর্য হচ্ছে একটি তারা আবার সূর্য কে কেন্দ্র করে সাতটি গ্রহ ঘুরছে । যে গ্রহটিতে আমরা বসবাস করি তার নাম পৃথিবী ।

 মহাবিশ্বের অধিকাংশ স্থানই খালি বা শূন্য । আর যেসকল উপাদান আছে তা বিভিন্ন মেঘের মত জমাট বদ্ধ অবস্থায় আছে । যেমন ,

 (ক) আমরা প্রায়ই নীহারিকার নাম শুনেছি তা হলো ধূলিকণা, হাইড্রোজেন গ্যাস এবং প্লাসমা দ্বারা গঠিত এক ধরণের আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘ যার মধ্যে ছায়াপথ ও সংযুক্ত থাকে । মহাবিশ্বের বেশীর ভাগ সদৃশ বস্তুকে নীহারিকার বা Nebula বলে পরিচয় দেওয়া হয় । যেখানে Nebul ‘র ল্যাটিন অর্থ : "কুয়াশা" ।

(খ) আবার ধূমকেতুর নাম ও শুনেছি । ধুমকেতু হল ধুলো, বরফ ও গ্যাসের তৈরি এক ধরনের মহাজাগতিক বস্তু।
মূল কথা হচ্ছে বিভিন্ন ছায়পথের তারা ও গ্রহ ছাড়া সকল উপাদান গ্যাসীয় মেঘের মত অবস্থান করছে যা মহাবিশ্বের সবচেয়ে বেশী জায়গা দখল করে আছে ।

হাবল স্পেস টেলিস্কোপ ( Hubble Space Telescope) উৎক্ষেপন (১৯৯০) এর পর বিজ্ঞানীরা স্পষ্ট করে দেখতে পেল মহাবিশ্বের অধিকাংশ স্থান ধূলিকণা, হাইড্রোজেন গ্যাস এবং প্লাসমা দ্বারা গঠিত এক ধরণের আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘ দ্বারা অবস্থান করছে । 

 এ ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ্ বলেন : 

অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ ,,,, (সূরা হা-মীম সেজদাহ ৪১:১১)

তার অর্থ প্রথমে মহাবিশ্ব ছিল গ্যাসীয় বা  ধুম্রকুঞ্জ প্রকৃতির পরে তা কিছূ অংশ থেকে বিভিন্ন রূপ নেয় যেমন গ্রহ , উগ্রহ ইত্যাদি । এবার আরো বাস্তবে আসি ;

নাসার হাবল_সাইট ’এ বিভিন্ন ধরণের আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘের অসংখ্য ছবি দেওয়া আছে । আমি মাত্র দুটোর কথা নিয়ে আসলাম ।

উপরের ছবিটি ( লিংক ০১লিংক ০২ ) নাসা হাবল টেলিস্কোপ থেকে ৫ জানুয়ারী ,২০১৫ তে প্রকাশ করে যার নাম Messier 16 এবং The Eagle Nebula একটি অংশ মাত্র  । যেটি লম্বায় প্রায় ৫ আলোক বর্ষ ( ১ আলোক বর্ষ = ৯.৪৬০৭×১০১২  কিলোমিটার )। পৃথিবী থেকে মাত্র ৬,৫০০ আলোক বর্ষ দূরে অবস্থিত যা বিভিন্ন গ্যাসীয় মেঘ পদার্থ দ্বারা গঠিত । ছবিতে বিভিন্ন বর্ণ দেখা যাচ্ছে যা বিভিন্ন উপাদান কে নির্দেশ করে । রশ্মি বিকরণের ক্ষেত্রে অক্সিজেনের এর জন্য নীল বর্ণ , সালফারের জন্য কমলা , হাইড্রোজেন ও নাইট্রোজেনের জন্য সবুজ বর্ণ প্রদর্শন করছে ।



এটির নাম Westerlund 2 ( লিংক ) এবং নাসা ছবিটি প্রকাশ করে ২৩ এপ্রিল ২০১৫ । এটি (Westerlund 2) প্রায় ৩,০০০ তারার সমন্বয়ে গঠিত । এটি আবার তারকাপুঞ্জ ক্যারিনা থেকে ২০,০০০ আলোক বর্ষ থেকে দূরে  , যেখানে তারকাপুঞ্জ ক্যারিনা আমদের থেকে মাত্র ৩১৩ আলোক বর্ষ দূরে আছে । এটি হাইড্রোজেন গ্যাসের মেঘ দ্বারা গঠিত ।
এখানে মাত্র দুইটার বর্ণনা দিলাম । মূলত পুরো মহাবিশ্বের অধিকাংশ স্থান এরূপ গ্যাসীয় বা ধুম্রকুঞ্জ প্রকৃতির  (নক্ষত্র , গ্রহ ,উপগ্রহ , ব্ল্যাক হোল ইত্যাদি ছাড়া  যারা খুবই অতি-সামান্য স্থান দখল করে আছে, তবে অনেক গ্রহ আছে যারা গ্যাসীয় পিন্ড দ্বারা গঠিত) ।





তাহলে দেখুন এসকল আবিষ্কার করা হয়েছে মাত্র কয়েক দশক আগে আর এসকল সারমর্ম পবিত্র কুরআনের আয়াত মহান আল্লাহ্’র পক্ষ থেকে শেষ নবী (সাঃ) এর উপর নাযিল হয়েছিল প্রায় ১৪৫০ বছর আগে ।

মহান আল্লাহ্ বলেন ;
আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি? (৫৪:১৭)







(অতি সংক্ষিপ্ত)

মোহাম্মদ মুদ্দাচ্ছির ইসলাম
এনভায়রনমেন্টাল সাইন্স
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ।

Comments

Popular posts from this blog

সমুদ্রের কোন কোন প্রাণী খেতে পারবেন ?

পৃথিবী গোলাকার না ডিম্বাকার!

নূহ আ:এর নৌকা ও বিশ্ব স্বীকৃতি ।