ভূপৃষ্ঠের উপরে বায়ুমন্ডলে অক্সিজেন বা বাতাসের ঘনত্ব ।

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ 

ভূপৃষ্ঠের উপরে বায়ুমন্ডলে অক্সিজেন বা বাতাসের ঘনত্ব (পবিত্র কুরআন কি সাক্ষ্য দেয় ?)


চিত্র ঃ০১


র্পথিবীতে  বাঁচতে হলে অবশ্যই অক্সিজেন লাগবে এটি ছাড়া প্রাণী জগৎ বেঁচে থাকা একেবারে অসম্ভব ।

ধরা হয় ,  বায়ুমন্ডলের ভর হচ্ছে প্রায় ৫×১০১৮ কেজি,যার তিন চতুর্থাংশ পৃষ্ঠের প্রায় ১১ কিলোমিটারের মধ্যে থাকে। বায়ুমন্ডলীয় গ্যাসসমূহের মধ্যে ৭৮.০৯% নাইট্রোজেন,২০.৯৫% অক্সিজেন থাকে ।

বায়ুমন্ডলের ঘনত্ব ও উপাদানের ভিত্তিতে পৃথিবীর চতুর্দিকের বায়ুমণ্ডলকে বিভিন্ন স্তরে ভাগ করা যায়, যেমন-

(১) ট্রোপোস্ফিয়ার,    (২) স্ট্রাটোস্ফিয়ার,    (৩) আয়নোস্ফিয়ার    (৪) এক্সোস্ফিয়ার  এবং    (৫) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার ।


 (১) ট্রোপোস্ফিয়ার [Troposphere] বা ঘনমণ্ডল : ভূপৃষ্ঠ থেকে মেরু অঞ্চলে প্রায় ৮ কিমি ও,নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রায় ১৮ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত অবস্থিত বায়ুস্তরকে ট্রপোস্ফিয়ার বলে । বায়ুমণ্ডলের প্রায় ৭৫% গ্যাসীয় পদার্থ এই স্তরে থাকায় এখানে বায়ুরচাপ সবচেয়ে বেশি এর ফলে এ স্তরে ঝড়, বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত, তুষারপাত প্রভৃতি ঘটনাগুলি ঘটতে দেখা যায় । আর আমরা বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে বসবাস করি । আর যতই উপরে উঠি ততই বায়ুর ঘনত্ব দ্রুত কমতে থাকে ।




(২) স্ট্রাটোস্ফিয়ার [Stratosphere] বা শান্তমণ্ডল: ট্রপোস্ফিয়ার-এর ওপরের ১৮ থেকে ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুস্তরকে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমণ্ডল বলে । স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে ধূলিকণা, মেঘ প্রভৃতি না থাকায় এখানে ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটে না । তাই দ্রুতগতিসম্পন্ন জেটবিমানগুলো ঝড়-বৃষ্টি এড়িয়ে চলার জন্য স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের মধ্য দিয়ে চলাচল করে ।

(৩) আয়নোস্ফিয়ার [Ionosphere] বা থার্মোস্ফিয়ার : ভূপৃষ্ঠের ঊর্ধ্বে ৮০ কিমি থেকে ৬৪০ কিমি পর্যন্ত উচ্চতায় বিস্তৃত হালকা বায়ূস্তরকে আয়নোস্ফিয়ার বলা হয় । এই স্তরে বায়ুমণ্ডলের মোট ভরের মাত্র ০.৫% আছে ।

(৪) এক্সোস্ফিয়ার [Exosphere]:  ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬৪০ কিমি উপরের ঊর্ধ্বের বায়ূস্তরকে এক্সোস্ফিয়ার বলা হয় । এই স্তরের বায়ু এত হালকা যে এই এর অস্তিত্ব প্রায় বোঝাই যায় না ।

তাহলে দেখা গেল যতই উপরে উঠা যায় ততই বায়ুমন্ডলের ঘনত্ব কমতে থাকে সাথে সাথে অক্সিজেনের পরিমানও কমতে থাকে ।

 আর এই বিষয়টাকে মাথায় রেখে মহান আল্লাহ বলেন :


অতঃপর আল্লাহ যাকে পথ-প্রদর্শন করতে চান, তার বক্ষকে ইসলামের জন্যে উম্মুক্ত করে দেন এবং যাকে বিপথগামী করতে চান, তার বক্ষকে সংকীর্ণ অত্যধিক সংকীর্ণ করে দেন-যেন সে সবেগে আকাশে আরোহণ করছে। (০৬:১২৫)

এখানে মহান আল্লাহ্ রূপক ভাবে স্পষ্ট ভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছেন যে, ‍ যাকে বিপথগামী করতে চান, তার বক্ষকে সংকীর্ণ অত্যধিক সংকীর্ণ করে দেন-যেন সে সবেগে আকাশে আরোহণ করছে। অর্থাৎ উপরে উঠলে আক্সজেনে বা বাতাসের  পরিমান দ্রুত কমে যায় তাই শ্বাস নিতে মারাত্বক অসুবিধে হয় যা পবিত্র কোরআনে এ ঘটনাকে ‘বক্ষ সংকীর্ণ’ বলে অভিহিত করেছেন ।

এ রূপক অর্থটি ভাল ভাবে বুঝতে হলে সূরা আল-হাদীদ এর ২০ নং আয়াত দেখুন সেখানে বলা আছে ;
[ তোমরা জেনে রাখ, পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক অহমিকা এবং ধন ও জনের প্রাচুর্য ব্যতীত আর কিছু নয়, যেমন এক বৃষ্টির অবস্থা, যার সবুজ ফসল কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে ,,,,, (৫৭:২০) ]

যদিও কৃষক এর আরবী (مزارع বা فلاح) কিন্তু এখানে কৃষকের আরবী হিসেবে মহান আল্লাহ্ রূপক হিসেবে (الْكُفَّارَ) কুফফার বলেছেন । কুফফার অর্থ গোপন করা বা মহান আল্লাহর বিষয়গুলোকে গোপন রাখে। এক্ষেত্রে কৃষক বীজ কে মাটিতে লুকিয়ে রাখে বলে মগান আল্লাহ্ তাকে রূপক ভাবে (الْكُفَّارَ) কুফফার বলেছেন।

বিষয় হচ্ছে এই যে, আজ থেকে ১৪৫০ বছর আগে পবিত্র কুরআন মহান আল্লাহ্ পক্ষ হতে শেষ নবী মুহাম্মদ সাঃ এর উপর নাযিল হয়েছিল । আর তখনকার যুগ ছিল অজ্ঞতার যুগ ।যদি তাদের একথা বুঝানোর চেষ্টা করা হতো যে , বায়ুমন্ডলে এক প্রকার যৌগ আছে তারা দ্বারা মানুষ বেঁচে থাকবে তাহলে বিষয়টা হবে একবারে অর্থহীন কিন্তু মহান আল্লাহ্ তার সৃষ্টি সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞাত তাই সঠিক ভাবে রূপক অর্থ গ্রহন করেছেন আবার অন্যান্য আয়াতে তা ব্যাখ্যা দিয়েছেন ।


(অতি সংক্ষিপ্ত)

মোহাম্মদ মুদ্দাচ্ছির ইসলাম
এনভায়রনমেন্টাল সাইন্স
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ।

Comments

Popular posts from this blog

সমুদ্রের কোন কোন প্রাণী খেতে পারবেন ?

পৃথিবী গোলাকার না ডিম্বাকার!

নূহ আ:এর নৌকা ও বিশ্ব স্বীকৃতি ।