প্রকৃতি ও স্বাদু পানির (Fresh water) চক্র ।
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
প্রকৃতি ও স্বাদু
পানির (Fresh water) চক্র (পবিত্র কুরআন এ সমন্ধে কি বলে)
মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে তা না হলে অনুধাবন করা যাবে না
।
মহান আল্লাহ
পবিত্র কুরআনে বলেন : কি! তারা কি তবে কুরআন
সন্বন্ধে ভাববে না, না কি হৃদয়ের উপরে সেগুলোর তালা দেয়া রয়েছে? (৪৭
: ২৪)
(আমরা জানি)পৃথিবীতে
মোট পানির ৯৭% লবনাক্ত (সমুদ্রের পানি) আর মাত্র ৩% স্বাদু বা মিঠা পানি ।
আবার ৩% স্বাদু পানির
মধ্যে ৮০ শতাংশ দুই মেরুতে বরফ আকারে জমা আছে আর বাকিটা আছে ভূগর্ভস্থ , হ্রদ , নদী
,বায়ুমন্ডলে ইত্যাদি । আর মোট হিসাব করলে ০.০০০১%
মাত্র নদীতে প্রবাহমান ! তার মানে পৃথিবীতে লবনাক্ত পানি অফুরন্ত সাথে সাথে স্বাদু
পানি খুব অল্প হলেও তার (শুধু নদীর পানি ধরলে ) বিশাল ভান্ডার রয়েছে ।
অনুবাদ : আর তার (পৃথিবী)
মধ্যে আমরা বানিয়েছি সুদৃঢ়-উচ্চ পর্বতমালা, আর তোমাদের পান করতে দিয়েছি সুপেয় পানি
। (মুরসালাত
৭৭:২৭)
পানি চক্রে পড়েছি সাগর
থেকে পানি বাষ্প আকারে উপরে ওঠে যায় এরপর তা ঠান্ডা হয়ে বৃষ্টি আকারে যমিনে পতিত হয়
। তার পর এত পানি কোথায় যায় ? নিশ্চই সবাই বলব নদীর মাধ্যমে আবার সাগরে গিয়ে পতিত হয়
। তাহলে একটা সিদ্ধান্ত আসা গেল সকল নদীগুলো ক্রমশ ঢালু হয়ে সাগরে গিয়ে পতিত হয়েছে
।
সিদ্ধান্ত
: ০১ সকল নদী ক্রমশ ঢালু হয়ে সাগরে মিশেছে
।
এবার আসি প্রশ্নে : যদি
প্রশ্ন করা হয় বাংলাদেশকে নদীমাতৃক হিসেবে কি বলে ডাকা হয় ?
(ক)ভাটির দেশ (খ) উজানের দেশ
সবাই বলব ভাটির
দেশ । কিন্তু কেন ? (নিজে নিজে চিন্তা করুন
পরে উত্তর খুঁজে পাবেন ।)
এবার নিজের দেশ দিয়ে শুরু করা যাক ।
আমাদের দেশের প্রধান নদী
হচ্ছে তিনটি ,যথাক্রমে (১) পদ্মা (২)মেঘনা (৩)যমুনা ।
আমরা জানি এই নদীগুলো
কোন না কোন পাহাড় থেকে উৎপত্তি হয়েছে । যেমন গঙ্গা বা পদ্মার উৎপত্তি
হচ্ছে পশ্চিম হিমালয়ে ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে ঠিক তেমনি যমুনা ও মেঘনা নদীর উৎপত্তি
হিমালয়
ও মেঘালয় পাহাড় থেকে ।
হিমালয় পাহাড় । |
হিমালয়ে প্রচুর বরফ জমা
থকে যা বসন্ত কালে গলতে থাকে পরে তা বিভিন্ন ছোট ছোট নদী / উপনদী / খালের মধ্য দিয়ে
বড় বড় নদীতে যুক্ত হয় এবং সৃষ্টি করে বড় বড় আর্ন্তজাতিক নদী । আর এভাবে যদি বরফ না
গলে উপর থেকে পানির প্রবাহ না থাকত তা হলে কখনই নদী গতিশীল থাকত না কিংবা তা মাটি ভরাট
হয়ে নদী হারিয়ে যেত । উদাহরন : ফারাক্কা বাঁধ দেবার ফলে পদ্মা
নদীতে গ্রীষ্মকালে গরু / মানুষ অনায়াশে চলতে পারে ।
সিদ্ধান্ত : ০২ সকল
নদী পাহাড় বা অতি উঁচু স্থান থেকে উৎপত্তি
চিত্র:০১ হিমালয়ের (নেপাল ও চীন) হিমাবহগুলোতে সবচেয়ে বেশী স্বাদু
পানি জমা আছে যা বরফ আকারে থাকে ।
চিত্র : ০২ বসন্ত কালে
হিমালয়ের বরফ গলে যায় যা ছোট ছোট খালের মধ্য দিয়ে বড় নদীতে মিশে যায় ।
চিত্র : ০৩ এভাবে বড়
বড় নদীগুলো পাহাড় থেকে উৎপত্তি হয়ে সাগরে পতিত হয় ।
এবার
যদি নীল নদের দিকে তাকাই যার উৎপত্তি লেক ভিক্টোরিয়া
থেকে । লেক ভিক্টোরিয়ার উচ্চতা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে গড়ে ১১৩৫ মি. । আবার পাহাড়ি এলাকাতে
প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং তা লেক ভিক্টোরিয়াতে জমা হয় যা পরে নীল নদে প্রবাহিত হয় ।
এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মেঘনা নদীটা এরূপ চরিত্রের ।
আবার
আমেরিকার অন্যতম নদী মিসিসিপি নদীর উৎপত্তি লেক
ইতাসকা থেকে যার সমুদ্র পৃষ্ঠ
থেকে গড় উচ্চতা ৪৫০ মি. । “ ইত্যাদি ”’
নদী
ছাড়া তো সুপেয় পানির কথা কল্পনাই করা যায় না । সকল বড় বড় ইন্ড্রাষ্টি বা নগরী নদীকে
কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে । আবার বাংলাদেশে এত নদী বলেই জনসংখ্যার এত ঘনত্ব বেশী । অনেক
দেশের সেচ তো সম্পূর্ন ভাবেই নদীর উপর নির্ভশীল । যেমন মিশর ৯০% সেচের পানি নীল নদ
থেকে নেওয়া ।
সিদ্ধান্ত
: ০৩ পৃথিবীতে সুপেয় পানির প্রধান উৎস নদী
।
তাহলে
নদী মানে সুপেয় পানি , আর এই সুপেয় পানির প্রবাহ আসে উচ্চ পর্বত মালা থেকে ।
চিন্তা
করুন পবিত্র কুরআনের কথা মাত্র এক লাইন কিন্তু ব্যাখ্যা !!!!
বিশেষ
দৃষ্টি:
পবিত্র কুরআন নাযিল হয়েছিল
১৪৫০ বছর আগে । কিন্তু এসব তত্ত্ব আবিষ্কার হয়েছে কয়েক শতক আগে । অপর দিকে নবী মুহাম্মদ
(সাঃ) ছিলে নিরক্ষর আবার বসবাস করতেন মরুময় এলাকাতে ।যেখানে নদী তো দূরে থাক স্বাভাবিক
ভাবে খাবার পানি পেতে হাহাকার অবস্থা । আবার তার পক্ষে এতসব জানা সম্ভব ও নয় কারণ তিনি
কখনও আরবদেশ থেকে বের হননি । সুতরাং এত জটিল বিষয়কে মাত্র সহজ ভাষায় একমাত্র মহান আল্লাহ
শেষ নবী মুহাম্মদ (সাঃ) ওহীর মাধ্যমে জানিয়েছেন ।
©
(অতি সংক্ষিপ্ত)
মোহাম্মদ মুদ্দাচ্ছির
ইসলাম
এনভায়নমেন্টাল সাইন্স (৪ র্থ বর্ষ)
Comments
Post a Comment
মন্তব্যঃ