কিয়মাতের দিন সাগরে আগুন ধরে যাবে
কিয়মাতের
দিন সাগরে আগুন ধরে যাবে (পবিত্র কুরআন কি ভাবে সাক্ষ্য দেয় ?)।
কিয়ামত মানে সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাওয়া । যেমন পবিত্র
কুরআনে আছে যখন সূর্য আলোহীন হয়ে যাবে, যখন নক্ষত্র মলিন
হয়ে যাবে, যখন পর্বতমালা অপসারিত হবে (৮১:১-৩)।
মহান আল্লাহ্ আবার সূরা ইনফিতারে বলছেন যখন আকাশ ফেটে যাবে , যখন তারকারা চারদিকে বিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে (৮২:১-২)।
মহান আল্লাহ্ বলেন :হে মানুষ ! কোন জিনিষ তোমাকে তোমার মহান রবের ব্যাপারে
ধোঁকায় ফেলে রেখেছে (৮২-০৬)।
কিয়ামতের আরো আলামত আছে তার মধ্যে অন্যতম ভয়াবহ আলামতের
মধ্যে হচ্ছে সাগরে আগুন ধরে যাওয়া ।
মহান আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে
বলেন :
অনুবাদ : এবং সমুদ্র যখন প্রজ্জ্বলিত
করা হবে (৮১:০৬)।
এখানে
سُجِّرَتْ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর মূল হচ্ছে
তাসজীর (سُجِّرَتْ ) এবং তা থেকে অতীতকালে কর্মবাচ্য এ শব্দটি ব্যবহৃত
হয়েছে। সাধারণত চুল্লীতে আগুন জ্বালাবার জন্য ‘তাসজীর’
শব্দ ব্যবহার করা হয় , ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন তারপর তা (সাগর) এক শিখাময় আগুনে পরিনত
হবে । (তাফহিমুল কুরআন , ইবনে কাসির । )।
পানির সংকেত হচ্ছে H2O
। তার মানে এক অনু পানি দুই অনু হাইড্রোজেন (H) ও এক অনু অক্সিজেন (O) এর সমন্বয়ে গঠিত
।
এখনে হাইড্রোজেন (H) এর
যতগুলো বৈশিষ্ট্য আছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নিজে নিজে জ্বলে , আবার অক্সিজেন (O)
এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে নিজে জ্বলে না কিন্তু অপরকে জ্বলতে সাহায্য করে । তার মানে
দুইটা গ্যাস একত্রে আসলে বিশাল একটা বিষ্ফোরক হিসেবে কাজ করবে ।
যেমন ,নতুন প্রযুক্তির
মাধ্যমে পানি দ্বারা গাড়ি চলতে শুরু করে দিয়েছে। কৌশল হচ্ছে পানি থেকে হাইড্রোজেন ও
অক্সিজেন আলাদা করে ইঞ্জিনে পোড়ানো হয় তাতেই পাওয়া যায় ইঞ্জিনের শক্তি । বিশ্বের পেট্রোল
শেষ হবার সাথে সাথে এই প্রযুক্তি জনপ্রিয় হচ্ছে ।
তহলে কি পানির যৌগ থেকে দুই অনু হাইড্রোজেন (H) ও
এক অনু অক্সিজেন (O) কে আলাদা করা যাবে ?
তহলে আসি কি ভাবে কাজ করে :
= ২ অনু পানি H2O » ২ অনু হাইড্রোজেন + ১ অনু অক্সিজেন । |
পানি থেকে হাইড্রোজেন
ও অক্সিজেন আলাদা করতে হলে বিদ্যুৎ প্রয়োজন । পানির এই বিভাজন প্রক্রিয়াকে বলা হয় ইলেকট্রোলাইসিস
ওফ ওয়াটার ।
সহজভাবে বলতে গেলে ব্যাটারির
ধনাত্বক প্রান্তের সাথে তার যুক্ত করলে সেই অংশকে বলে অ্যানোড আর ব্যাটারির ঋনাত্বক
প্রান্তের সাথে তার যুক্ত করলে সেই অংশকে বলে ক্যাথোড প্রান্ত । অ্যানোড ও ক্যাথোড
প্রান্তর তার দুটিকে পানির পাত্রে রেখে তার উপর পানি ভর্তি দুইটা টেস্টটিউবে রেখে দিয়ে
বিদ্যুৎ সংযোগ দিলেই হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন আলাদা আলাদা টেস্টটিউবে জমা হবে ।
ভিডিও : পানির বিভাজন
পানির বিভাজন (ভিডিও)
আবার অন্যত্রে মহান আল্লাহ বলেন : যখন সমুদ্র ফাটিয়ে ফেলা হবে (৮২:০৩)।
সূরা তাকভীরে বলা হয়েছে , সমুদ্রগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হবে এবং এখানে বলা হয়েছে , সমুদ্রগুলোকে ফাটিয়ে ফেলা হবে ৷ এই উভয় আয়াতকে মিলিয়ে দেখলে একটি বিশেষ এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং একই সময় সারা দুনিয়াকে প্রচণ্ডভাবে আলোড়িত করে দেবে , এ বিষয়টিকেও সামনে রাখলে সমুদ্রগুলোর ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়ার ও তার মধ্যে আগুন লেগে যাবার প্রকৃত অবস্থাটি আমরা অনুধাবন করতে পারি (তাফহিমুল কুরআন)।
যখন সমুদ্র ফাটিয়ে ফেলা হবে এ কথার অর্থ বুঝার জন্য কিছূ তাত্ত্বিক
আলোচনা করা যাক ।
সমুদ্র বিজ্ঞানে
(Oceanography) একটা পরিভাষা আছে তা হলো সামুদ্রিক শৈলশিরা
(Oceanic Ridge) । সামুদ্রিক শৈলশিরা (Oceanic Ridge) কি
আপনি তা জানেন ?
চিত্র : সামুদ্রিক শৈলশিরা (Oceanic Ridge) । |
পৃথিবীর উপরিভাগ মূলত
কতগুলো টেকটোনিক প্লেটের উপর দাঁড়িয়ে আছে আর এই প্লেটের মধ্যবর্তী স্থানগুলো বিচুত্যির
কারনে সামুদ্রিক শৈলশিরা (Oceanic Ridge) তৈরী হয় । আর সমুদ্রের নীচে গলিত ও উত্তপ্ত
লাভা সক্রিয় আছে আমরা সবাই জানি । সামুদ্রিক শৈলশিরা (Oceanic Ridge) এর মাঝে লাভা
বেশী সক্রিয় থাকে । সামুদ্রিক শৈলশিরা (Oceanic Ridge) এখনও ভারসাম্য অবস্থায় আছে তবে
অতি বিশাল ভূমিকম্প হলে নিশ্চিত ভাবে এদের মধ্যে বিশাল হেরফের হয়ে উঠবে তখন একপ্রকার
বিশাল বির্পযয় ডেকে আনবে ।
পৃথিবীর একবারে কেন্দ্রের গঠন সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নয় । তবে কেন্দ্রে বিপুল পরিমানে শক্তি
জমা আছে । হয়ত এক প্রকার শক্তি জমা থাকবে যা কিনা পানিকে ভাংতে সক্ষম হবে (কি ভাবে হবে মহান আল্লাই সবচেয়ে ভাল জ্ঞাত)। যেহেতু
কুরআনে আছে সমুদ্রে আগুন ধরে যাবে তার মানে ঘটনা নিশ্চিত , কারন কয়েক শত বছর অগেও সবাই
পানিকে আগুনে নিক্ষেপ করত যাতে আগুন নিভে যায় কিন্তু পবিত্র কুরআনের এই আয়াত মহা নবী
(সাঃ) এর কাছে সম্পূর্ণ উল্টে ভাবে নাযিল হয়েছিল তারপরও এটাকে তার এড়িয়ে যাবার কোন
সাধ্য ছিলো না ।
মানুষ এ অবধি প্রমান
করতে পেরেছে পানি কে ভেঙ্গে থেকে সহজে আগুন জ্বালাতে সক্ষম আর বাকী কিছু প্রমান মহান
আল্লাহর হাতে রেখে দিয়েছেন কারন তিনি হয়ত যুগের আরো আধুনিকতার সাথে প্রমান করে ছাড়বেন
যে বাকীটাও সম্ভব আর কুআন ও সত্য ।
দেখুন মহান আল্লাহ্ মাত্র
দুটো আয়াত মহা নবী (সাঃ) এর উপর নাযিল করেছন আর তা মানুষের আবিষ্কার করে দেখাতে হাঁসফাস
খেয়ে যাচ্ছে তার পরেও শেষ সমাধান এর নিশ্চিত ভাবে আশার আলো দেখিয়ে যাচ্ছে ।
(সংক্ষিপ্ত)
মোহাম্মদ
মুদ্দাচ্ছির ইসলাম
এনভায়নমেন্টাল
সাইন্স
নোয়াখালী
সাইন্স এন্ড টেকনোলোজি ইউনিভার্সিটি।
Comments
Post a Comment
মন্তব্যঃ